প্রকাশিত: Mon, Jan 15, 2024 8:08 PM
আপডেট: Wed, Jul 2, 2025 12:57 AM

[১]মৌলভীবাজারে পর্যটন শিল্পের বিকাশে প্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়নি

স্বপন দেব,  মৌলভীবাজার:[২]  জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, ২০০৮ সালে মৌলভীবাজারকে পর্যটন জেলা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বিচ্ছিন্নভাবে সংরক্ষিত বনাঞ্চল, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুন্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্ক উন্নয়নের মধ্যেই পর্যটন বিকাশের ধারণা আটকে আছে। এছাড়া চা-বাগান, হাওর, পাহাড় ও সমতলের বৈচিত্র্যপূর্ণ জনপদ ঘিরে পর্যটনের অমিত সম্ভাবনা কাজে লাগানোর সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। 

[৩] জানা গেছে, গত কয়েক বছরে এখানে আধুনিক মানের হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট গড়ে উঠলেও পর্যটন শিল্পের সামগ্রিক বিকাশ হয়নি। পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান সেভাবে গড়ে উঠেনি। ফলে চাঙা হয়নি ব্যবসা-বাণিজ্য। 

[৪] পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আগে জেলা প্রশাসনের স্লোগান ছিল ‘প্রকৃতি মুখরিত মৌলভীবাজার’। পরে এটি পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘চায়ের দেশ মৌলভীবাজার’। নাম পরিবর্তন হলেও গত ১৫ বছরে পর্যটন শিল্পের বিকাশে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। বেসরকারিভাবে আধুনিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট গড়ে উঠলেও পর্যটক কম আসায় অনেক ব্যবসায়ী হতাশায় ভুগছেন।

[৫] ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, এখানে সব মৌসুমে দেশ-বিদেশি পর্যটকের যাতায়াত থাকে। তবে যে পরিমাণ পর্যটক আসার কথা কিংবা যেভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য হওয়ার কথা সেভাবে হচ্ছে না। অথচ জেলায় দুই শতাধিক পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে।

[৬] হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীদের মতে, জেলায় রয়েছে দেড় শতাধিক হোটেল- মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গলের পাঁচ তারকা হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, সদরের নিতেশ্বর এলাকার দুসাই রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা উল্লেখযোগ্য। 

[৭] প্রতিবছর সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসব হোটেলের শতভাগ কক্ষ বুকিং থাকে। কিন্তু গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অবরোধ-হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রায় ৯৫ শতাংশ বুকিং বাতিল হয়ে গেছে। 

[৮] জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পর্যটকের খরা কাটিয়ে উঠতে ২০১৭ সালে জেলা প্রশাসন থেকে পর্যটন শিল্পের বিকাশ, সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো চিহ্নিত করে একটি কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু গত ছয় বছরেও এর কোনোটি বাস্তবায়ন হয়নি। কর্মকৌশল রয়ে গেছে কাগজে-কলমে। এছাড়া ২০২২ সালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সভায় নেওয়া অনেকগুলো সিদ্ধান্ত আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

[৯] পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঢেলে সাজানোর কথা জানান জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম। তিনি বলেন, পর্যটনকেন্দ্রলোতে আরও পর্যটক কীভাবে আকৃষ্ট করা যায়, সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। বিশেষ করে নতুন পর্যটনকেন্দ্রগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, যাতে পর্যটকরা সেগুলো দেখে মুগ্ধ হন। বিদেশি পর্যটক টানতে আরও কিছু উদ্যোগ নেয়ার কথা ভাবছি আমরা।